কিভাবে পরীক্ষার প্রস্তুুতি নিলে ভাল রেজাল্ট করা সম্ভব
যে কোন পরীক্ষা তোমার ভবিষ্যৎ জীবনকে বদলে দিবে। কেননা পরীক্ষার প্রস্তুুতি যদি ভাল হয় তাহলে ভাল রেজাল্ট হবে, পিতামাতার আশা আকাঙ্খা পুরন হবে, সমাজে তোমাকে প্রশংসা করবে। কিন্তুু যদি তুমি পরীক্ষার জন্য ঠিকমত পড়াশুনা না কর, সময়কে ঠিকমত কাজে না লাগাও,
সঠিক পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণ করবে
-
একটি স্টাডি প্ল্যান তৈরি করা: পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার আগে একটি বিস্তারিত স্টাডি প্ল্যান তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। পরীক্ষার তারিখ, বিষয়ভিত্তিক অধ্যায়, এবং দৈনিক পড়াশোনার সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে। একটি কার্যকরী স্টাডি প্ল্যানের মাধ্যমে তুমি প্রতিদিন কী পড়বে তা পূর্ব নির্ধারিত থাকবে, যার ফলে তুমি বিশৃঙ্খলভাবে পড়াশোনা না করে সুসংগঠিতভাবে পড়তে পারবে।
-
ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করা: প্রতিদিনের জন্য ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করবে যা সহজেই অর্জনযোগ্য। এই ছোট ছোট লক্ষ্যগুলো তোমাকে বড় লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে এবং তোমাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
-
সময় নির্ধারণ করা: প্রতিদিনের পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করবে এবং সেই অনুযায়ী পড়া চালিয়ে যেতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ের জন্য বিভিন্ন সময় নির্ধারণ কর যাতে করে কোনো একটি বিষয় বেশি পড়ে অন্য বিষয়গুলো অবহেলিত না হয়।
ভাল রেজাল্ট করার জন্য উপযুক্ত নোট তৈরি করবে
-
সংক্ষিপ্ত নোটস তৈরি করা: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিশেষ করে তোমার পাঠ্যবইয়ের সংক্ষিপ্তভাবে নোট তৈরি করতে হবে । এতে পড়াশোনা সহজ হবে এবং পরীক্ষার প্রস্তুুতি ভাল হবে।
-
মাইন্ড ম্যাপ ব্যবহার করা: বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে মাইন্ড ম্যাপ বা ডায়াগ্রাম তৈরি করতে হবে।
নিয়মিত রিভিশন বা পাঠ্য বইয়ের পড়াগুলো পুনরাবৃত্তি করবে:
-
সাপ্তাহিক রিভিশন করা: প্রতি সপ্তাহের শেষে পড়ার বিষয়গুলো ঠিকমত রিভিশন করে নিবে।
-
রিভিশন শীট তৈরি করা: গুরুত্বপূর্ণ ফর্মুলা, তারিখ ও সংজ্ঞাগুলো আলাদা করে একটি রিভিশন শীট তৈরি করবে। এতে করে তৈরিকৃত পড়াগুলো আরও ভাল হবে।
প্রাকটিস এবং পুরানো প্রশ্নপত্রগুলো যত্নসহকারে পড়বে
- মডেল টেস্ট: পুরানো প্রশ্নপত্র বা মডেল টেস্ট পেপার দিয়ে নিজেকে পরীক্ষা করবে। এতে পরীক্ষার পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারবে এবং পরীক্ষার সময় নিজেকে কেমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে তা জানতে পারবে।
- সময়সীমা মেনে চলা: প্রতিটি পরীক্ষা সময়মতো শেষ করার চেষ্টা করবে। এতে পরীক্ষার সময় ম্যানেজমেন্ট দক্ষতা বাড়বে এবং তুমি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উত্তর দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারবে।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে
-
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা: প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। কাজেই ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।
-
সঠিক খাবার খাওয়া: পুষ্টিকর খাবার খাবে যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
-
নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা: প্রতিদিন কিছুটা শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে যাতে শরীর এবং মন সতেজ থাকে।
পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করতে হবে
-
শান্ত পরিবেশ তৈরি করা: পড়াশোনার জন্য একটি শান্ত ও মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
-
বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করা: মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।।
নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে, আত্মহারা হওয়া যাবেনা
-
পজিটিভ চিন্তা করা: নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। পজিটিভ চিন্তা ও আত্মবিশ্বাস তোমাকে ভাল ফল করতে সহায়তা করবে।
-
মানসিক চাপ কমার চেষ্টা করা: পরীক্ষার সময় মানসিক চাপ কমানোর জন্য শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পার।
কার্যকরী নোটস তৈরি করতে হবে
-
সংক্ষিপ্ত নোটস তৈরি করা: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষিপ্তভাবে নোট করবে। এতে পড়াশোনা সহজ হবে এবং পরীক্ষার আগে রিভিশনের জন্য এটি বেশ কার্যকরী হবে। বিষয়ভিত্তিক নোট তৈরি করলে প্রয়োজনীয় তথ্য দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায়।
-
মাইন্ড ম্যাপ বা ডায়াগ্রাম তৈরি করা: বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক বোঝার জন্য মাইন্ড ম্যাপ বা ডায়াগ্রাম তৈরি করবে। এটি জটিল ধারণাগুলো সহজে বোঝার জন্য সাহায্য করবে এবং তোমার মস্তিষ্ককে বিষয়গুলোর মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি
-
পরীক্ষার দিন আগে প্রস্তুতি: পরীক্ষার আগের দিন সবকিছু প্রস্তুত করে রাখবে, যেমন পরীক্ষা হলে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, এডমিট কার্ড, রেজিষ্ট্রেশন কার্ড, কলম, শাইন পেন, পেন্সিল ইত্যাদি। পরীক্ষার দিন সকালে তাড়াহুড়ো না করে শান্তভাবে পরীক্ষার হলে পৌঁছাবে।
-
হালকা রিভিশন: পরীক্ষার আগের দিন হালকা রিভিশন করবে, কিন্তু নতুন কিছু পড়ার চেষ্টা করবে না। নতুন কিছু পড়তে গেলে মানসিক চাপ বাড়তে পারে।
পরীক্ষা হলের কৌশল
-
প্রশ্নপত্র ভালভাবে পড়া: প্রথমেই পুরো প্রশ্নপত্রটি ভালভাবে পড়ে নিতে হবে এবং কোন প্রশ্নের উত্তর আগে দেবে তা ঠিক করে নিবে। এতে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারবে।
-
সময় বন্টন নিশ্চিত করা: প্রতিটি প্রশ্নের জন্য নির্দিষ্ট সময় বন্টন করবে এবং সময় মেনে চলবে। কোনও প্রশ্নে বেশি সময় ব্যয় করলে অন্যান্য প্রশ্নগুলির জন্য সময় কম পড়তে পারে।
-
সহজ প্রশ্ন আগে করা: যেসব প্রশ্ন সহজ বা যেগুলোর উত্তর তুমি নিশ্চিতভাবে জানো সেগুলো আগে উত্তর দিবে। এতে তোমার আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং সময় বাঁচবে।
-
পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দিবে: উত্তরগুলি পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্তভাবে লিখবে। অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বাদ দিয়ে মূল বিষয়ে মনোযোগ দিবে।
পরীক্ষার পরে যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখবে
-
বিশ্রাম নিবে: পরীক্ষার পরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিবে। আগামী পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে তোমার মন ও শরীরকে রিফ্রেশ করবে।
-
পরীক্ষার বিশ্লেষণ করবে: পরীক্ষার পরে নিজের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করবে। কোন কোন প্রশ্নে তুমি ভাল করেছ এবং কোন কোন প্রশ্নে সমস্যা হয়েছে তা খুঁজে বের করবে। এতে আগামী পরীক্ষার জন্য তুমি আরও ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে।
-
আগামীর পরিকল্পনা: পরবর্তী পরীক্ষার জন্য নতুন করে পরিকল্পনা করবে এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে।
এই পরামর্শগুলো মেনে চললে পরীক্ষার প্রস্তুতি আরও কার্যকর হবে এবং ভাল রেজাল্ট করা সম্ভব হবে।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস
প্রিয় ছাত্রছাত্রী তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে উজ্জ্বল করতে ভাল রেজাল্ট করার জন্য একটি সুসংগঠিত এবং নিয়মিত প্রস্তুতির প্রয়োজন। উপরে উল্লিখিত কৌশল ও পরামর্শগুলি অনুসরণ করলে তুমি পরীক্ষায় ভাল ফল করতে পারবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আত্মবিশ্বাস রাখা এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া।
কঠোর পরিশ্রম এবং সঠিক কৌশল তোমার সফলতার মূল চাবিকাঠি। আশা করি
তোমরা যারা পরীক্ষা দিবে তাদের জন্য আমার এই গুরুত্বপূর্ন টিপস
অত্যন্ত উপকারী হবে। যদি তোমাদের ভাল লাগে তাহলে বেশি বেশি করে
লাইক দিবে এবং কিছু বিষয় জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবে।
ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url