OrdinaryITPostAd

শিক্ষার মান উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

 বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে  বিশ্বজুড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবহারের সক্ষমতা দ্বারাই একটি বা রাষ্ট্রের ক্ষমতা। বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম রুপরেখা হিসবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠন করাকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি শিক্ষিত দেশ ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিশ্বমানের শিক্ষা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিগত শিক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরী শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়ন ঘটানোর প্রয়াস চালানো হচ্ছে। 









পেজ সূচীপত্র:

 তথ্য বাংলা শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Information এবং প্রযুক্তি বাংলা শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Technology . কম্পিউটার, ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়া সিস্টেম, মোবাইল ফোন, টেলিযোগাযোগ, রেডিও এবং টেলিভিশন ব্যবস্থার মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ এর সত্যতা ও বৈধতা যাচাই , একত্রীকরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং বিনিময় বা পরিবেশনের ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তি বলা হয়। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষতা আনতে হবে। 

অনলাইন ভিত্তিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির অনেক অবদান । অনলাইনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা, পরীক্ষা দেয়া কিংবা শিক্ষামূলক বিভিন্ন ওয়েবসাইট হতে শিক্ষা লাভ করা যায়। কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা থাকলে ঘরে বসে এমনকি বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষা বিষয়ক সমস্ত কাজগুলো পরিচালনা করতে পারবে।শিক্ষকদের লেকচারগুলো ওয়াবসাইটে আপলোড করে  সরবরাহ করা হচ্ছে। পাঠ্য বইগুলো অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে না পড়িয়ে এখন মাল্টিমিডয়া ক্লাশরুমের সুবিধা যুক্ত হওয়ায় ছাত্ররা সহজে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সহজতর করে তুলেছে। 

আরো পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার ১০টি নিয়ম জেনে নিন

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অতীত অবস্থা

অতীতে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নত বিশ্বের মত আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত ছিলনা। এদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল, তাছাড়া শিক্ষকরাও ততটা প্রশিক্ষিত ছিলনা।  তারা তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে ছিল । এখনো গ্রাম বাংলার প্রত্য অঞ্চলে যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক দিয়ে স্কুল কলেজকে সমৃদ্ধ করা যায়নি। পাঠ্য পুস্তকের বিষয়সমুহ শিক্ষকগণ শ্রেণিকক্ষে যেভাবে উপস্থাপন করতো তাতে ছাত্রছাত্রীরা পাঠ্য বিষয়কে না বুঝেই আত্মস্থ করার চেষ্টা করতো। শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির  সুযোগ ও পরিবেশ না থাকায় এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার মান ছিল পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে। একটি শক্তিশালী শিক্ষা ব্যবস্থা গঠনে শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও  যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়ায়।


 

 

 

 

 

 

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত শিক্ষা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা ও ২০১২ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করা হয়। শিক্ষানীতিতে শিক্ষার সকল স্তরে তথ্য প্রযুক্তিকে সংযুক্ত করা হয়েছে। নিম্নে শিক্ষার স্তর ভিত্তিক বর্মান অবস্থান সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো:

প্রাথমিক শিক্ষা হলো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাথমিক স্তর। আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল, আনন্দময় , সহজবোধ্য ও শিক্ষাকেন্দ্রীক করে তোলার জন্য অন্যতম বিষয় হলো এক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা। এজন্য প্রাথমিক শিক্ষা কন্টেন্টকে ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে রুপান্তরিত করা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোড কতৃক প্রণীত প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের (প্রথম-পঞ্চম শ্রেণি) আলোকে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ক ১৭টি বইয়ের ইন্টারঅ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল শিক্ষা কন্টেন্ট তৈরী করা হয়েছে।

পাঠ্যপুস্তকের ধারনাসমুহকে আরও সহজবোধ্য করতে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ছবি, চাট , ডায়াগ্রাম, অডিও, ভিডিও মাল্টিমিডিয়া উপকরণসমুহ সংযোগজন করে অ্যানিমেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক, প্রশিক্ষক, প্যাডাগোজি বিশেষজ্ঞ, কালার প্রোগ্রামিং এর দ্বারা সরাসরি অংশগ্রহন ও মতামতের ভিত্তিতে প্রতিটি অধ্যায়ে কাঙ্খিত শিখনফলের আলোকে এই ডিজিটাল কন্টেন্টসমুহ প্রস্তুুত করা হচ্ছে। 

 


 

 

 

 

 

 

 দেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্সা পদ্ধতিতে ডিজিটাল আবহ যোগ করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। (এটুআই) প্রকল্প, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট ইন সেকেন্ডারি এডকেশন প্রজেক্টের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা পদ্ধতির মান উন্নয়ন ঘটাতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে আগ্রহী করে তুলতেএ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর আওতায় সারাদেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরী এবং শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া ব্যবহার করে পাঠদানে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে

class="alert info"

আরও পড়ুন:

এছাড়া দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি চলমান। শ্রেণিতে পাঠদানকালে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনো কোনো বিভাগের শিক্ষকগণ এবং বিসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রায় অধিকাংশ শিক্ষকগণ মাল্টিমিডিয়ার সাহায্য নিয়ে থাকেন। অধিকাংশ বিভাগগুলোতে কম্পিউটার ক্লাব এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। সুতরাং প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তথ্য প্রযুক্তি সম্বন্ধে জানা ও আয়ত্ব করা 

UNESCO কতৃক গঠিত International Commission on Education for Twenty-First Century এর প্রতিবেদনে তথ্য প্রযুক্তি কে একবিংশ শতাব্দীর জন্য একটি আবশ্যকীয় দক্ষতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদেরকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে প্রস্তুুত করার লক্ষ্য থেকে বিশ্বের প্রায় সকল দেশের শিক্ষাক্রম নতুন বিষয় হিসেবে তথ্য প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০১২ এ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আবশ্যিক বিষয় হিসেবে  তথ্য  প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে।  শিক্ষকগণ ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ ব্যবহার করে সফলভাবে শ্রেণিতে  পাঠদান করতে পারেন। 

শিখন পদ্ধতিকে যুগোপযোগী করার জন্য  গুরুত্বপুর্ ভুমিকা পালন করে আসছে তথ্য প্রযুক্তি। তথ্যপ্রয়ুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুুত করা যায়, যা গতানুগতিক শিক্ষা উপকরনের চেয়ে যথেষ্ট ভুমিকা রাখে। শিক্ষকগণ ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ সফলভাবে শ্রেণিতে সফলভাবে পাঠদান করতে পারেন। ওয়াল্ড ওয়ােইড ওযেব এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার করে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শ্রেণিকক্ষ ও পাঠ্য পুস্তকের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী জ্ঞানের সন্ধান করতে পারে। 

আবার তথ্য প্রযুক্তি এর সাহায্যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের (যেমন: প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক) জন্য বিভিন্ন Computer Assisted Learning  Computer Assisted সফটওয়্যার প্রস্তুত করা যায়। ফলে দেশ ও বিশ্বব্যাপী সবার জন্য শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন কাজ বাস্তবায়নে তথ্যপ্রযুক্তির যুগোপযোগী অবদান রেখে চলেছে। 

তথ্য প্রযুক্তি   সহায়ক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা

তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন যে কোন মানুষ যে কে কোন সময় যে কোন স্থান থেকে শিক্ষা লাভ করতে পারে। বাংলাদেশে বসে একজন ছাত্র চাইলে আমেরিকার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করতে পারে। অনলাইনে শিক্ষক তার ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা গ্রহণ ও মূল্যায়ন করে প্রশংসা পত্র প্রদান করতে পারে। আর এই ব্যভস্থাকে সহজভাবে (Virtual Learning Environment) বলা হয়। বর্মানে বিভিন্ন দেশে Virtual University, Virtual Library, Virtual Museum ইত্যাদি গড়ে উঠেছে। 

শিক্ষার মান উন্নয়নে তথ্য প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ

শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও ৃেযাগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে, তেমন নতুন চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন করে দিয়েছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো নিম্নরূপ:

ক) ডিজিটাল ডিভাইড: তথ্য প্রযুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেশি হওয়ায়  দেশের সকল মানুষের পক্ষে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে বেশিরভাগ  ছাত্রছাত্রী তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য যারা তথ্য প্রযুক্তি সম্মন্ধে জাননা তাদের তুলনায় যারা জানে তারা বিভিন্ন কাজে বিশেষ করে ব্যবসায় বাণিজ্য, সরকারি সেবা গ্রহণ ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে অধিক সুবিধা পেয়ে থাকে। এ বৈষম্য দুর করার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে উদ্যোগ ও সহযোগীতা করা দরকার। যেমন : তথ্য প্রযুক্তির উপর অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার , বিশেষ শিক্ষা ঋনের সুবিধা সহজলোভ্য করা , বিনা মুল্যে সেবা পাওয়ার জন্য ই-তথ্য সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। 

খ) প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজেট: তথ্য প্রযুক্তির উচ্চ দামের তুলনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট পরিমানে বাজেট না থাকায় তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী উপকরনসমুহ ক্রয় করতে পারেনা। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে একটি প্রতিষ্ঠানে একাধিক ছাত্রছাত্রী কাজ করে থাকে। আবার কোন সময় এগুলো ব্যবহার করার সময় নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত খরচও বেশী হওয়ায় সেগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিবছর যথেষ্ট পরিমানে বাজেট বরাদ্দ থাকা দরকার। 

গ) জেন্ডার সমতা: বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা দেখা গেছে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে। মেয়েদের এই অনগ্রসরতা তথ্যপ্রযুক্তির এর ক্ষেত্রেও দৃশ্যমান। সুতরাং মেয়েদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী ও দক্ষ করা একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

ঘ) নকল প্রবনতা: অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে সরাসরি কপি পেস্ট করে তাদের এ্যাসাইনমেন্ট বা বিভিন্ন কাজে প্রস্তুুত করে তথ্যের উৎস উল্লেখ করেনা। এটাকে নকল প্রবনতা বলা যায়, যা অনৈতিক কাজ। কাজেই এধরনের কাজ না করে অন্যের তথ্যগুলো নিজের নামে না লিখে লেখকের নাম উল্লেখ করা উচিত বলে মনে করি। 

ঙ) নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা: ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে নতুন নতুন অপরাধ ও অনৈতিক কাজের ব্যাপকতা বাড়ছে, যেমন- অন্যের গোপন তথ্য চুরি করা , অন্যের প্রোগ্রাম ফাইলে প্রবেশ করে তার ক্ষতি করা , অন্যকে ভয়ভীতি দেখানো ইত্যাদি। এগুলোকে সাধারনভাবে (Cyber Crime) বলা হয়। সাইবার ক্রাইম থেকে নিরাপদ থাকার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন সিকিউরিটি ও এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার পাওয়া যায়, কিন্তুু এগুুলো ব্যয়বহুল বিধায় প্রতিষ্ঠানের স্বল্প বাজেটের কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা ক্রয় করা সম্ভব হয় না। 

চ) বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা প্রদান: সাধারন শিশুদের কথা মাথায় রেখে সাধারণত ডিজিটাল কনটেন্ট বা শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুুত করা হয়। কিন্তুু বিশেষ চাহিদু সম্পন্ন শিশুদের (যেমন: প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশু) শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

ছ) শিক্ষক প্রশিক্ষন: বাংলাদেশের অধিকাংশ শিক্ষকগণ তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ নন। এজন্য শিক্ষায় তথ্য প্রযুক্তিকে বাস্তবায়ন করার জন্য শিক্ষকগণকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন দিতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার এই উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ফলে তথ্য প্রযুক্তিতে দ্রুত সাফল্য আনতে সক্ষম হয়েছে।

ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ উত্তোরণের উপায় ও সুপারিশ

শিক্ষার মান উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির  ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ উত্তোরণের উপায় এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০১২, নিম্নরুপ সুপারিশ করেছে:

ক) প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জরুরী ভিত্তিতে প্রত্যেক শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান

খ) প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য ১টি করে কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতকরন

গ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ল্যাব প্রদান

ঘ) ক্লাশগুলো কম্পিউটার ল্যাওব নেয়ার ব্যবস্থা

ঙ) সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ল্যাব সহকারী নিয়োগের ব্যবস্থা। পরবর্তেতে একাধিক ল্যাব সহকারী নিয়োগের সুপারিশ

চ) প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান

ছ) আইসিটি সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ

উপসংহার: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আওতায় আনা অতীব প্রয়োজন। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকার গৃহীত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সকল কর্মসুচীর সফল বাস্তবায়ন হলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বিপ্লব সাধিত হবে। তবে সরকারে পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে। তবেই আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে তথ্য প্রযুক্তিমুখী  সমৃদ্ধ করা  সম্ভব হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪